আজ শুক্রবার, সাপ্তাহিক ছুটির দিন। এ কারণে ঢাকার সড়কে যান চলাচল ও জনসমাগম দুই-ই কম। তা সত্ত্বেও আজ ঢাকার বাতাসে উন্নতির দেখা নেই। টানা কয়েকদিন শহরটির বায়ুমান ‘মাঝারি’ পর্যায়ে থাকলেও, আজ তা ‘সংবেদনশীলদের জন্য অস্বাস্থ্যকার’ হয়ে উঠেছে।
আজ (১৮ জুলাই) সকাল ৯টা ৬ মিনিটে ঢাকার বাতাসের একিউআই স্কোর বেড়ে দাঁড়ায় ১২৩ এ। এই স্কোর নিয়ে আবারও বিশ্বের দূষিত বাতাসের শহরের তালিকার শীর্ষ দশে চলে এসেছে শহরটি।
গত কয়েকদিন মৌসুমি বৃষ্টির প্রভাবে শহরটির বায়ুমানে পরিবর্তন দেখা গিয়েছিল। ‘ভালো’ হতে না পারলেও বেশ কয়েকদিন ধরেই ঢাকার বাতাসের মান ‘মাঝারি’ ছিল। গতকাল সকালে বৃষ্টির পরে একিউআই স্কোর ছিল ৬৮।
তবে বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে মেঘ কেটে রোদ উঠতে শুরু করে। এরপর থেকে আর বৃষ্টিপাত হয়নি। আজ সকালেও ঝকঝকে আকাশে সোনালি রোদ দেখা গেছে। রোদের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে যেন বাড়তে শুরু করেছে বায়ু দূষণের মাত্রা। ফলে এক দিনের ব্যবধানে ৬৮ থেকে একিইআই স্কোর গিয়ে দাঁড়িয়েছে ১২৩ এ।
একিউআই স্কোর শূন্য থেকে ৫০-এর মধ্যে থাকলে তা ‘ভালো’ এবং ৫০ থেকে ১০০ মধ্যে থাকলে তা ‘মাঝারি’ বলে গণ্য করা হয়। এরপর এই স্কোর ১০১ থেকে ১৫০ হলে ‘সংবেদনশীল গোষ্ঠীর জন্য অস্বাস্থ্যকর’ বলে গণ্য করা হয়। এই পর্যায়ে সংবেদনশীল ব্যক্তিদের দীর্ঘ সময় বাইরে পরিশ্রম না করার পরামর্শ দেওয়া হয়।
একই সময়ে আজ আবার তালিকার শীর্ষে অবস্থান করছে কঙ্গোর কিনশাসা, শহরটির স্কোর ১৭৪। আশ্চর্যের বিষয় হলো গতকাল তালিকার শীর্ষে থাকা মিসরের কায়রো আজ নেমে গেছে ৩৫ তম স্থানে, শহরটির একিউআই স্কোর মাত্র ৬৪।
একই সঙ্গে পাকিস্তানের লাহোরের বাতাসেও ঢাকার মতো অবনতি দেখা গেছে, কয়েকদিন ইতিবাচক পরিবর্তন দেখা দিলেও আজ আবার ১৫৯ স্কোর নিয়ে তালিকার তৃতীয় স্থানে চলে এসেছে। দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে ইন্দোনেশিয়ার জার্কাতা, স্কোর ১৬৭।
আরও পড়ুন: ঢাকার বায়ুদূষণে আজ বৃষ্টির প্রভাব
কণা দূষণের এই সূচক ১৫১ থেকে ২০০ হলে ‘অস্বাস্থ্যকর’, ২০১ থেকে ৩০০ হলে ‘খুব অস্বাস্থ্যকর’ এবং ৩০১-এর বেশি হলে তা ‘বিপজ্জনক’ হিসেবে বিবেচিত হয়। জনস্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ঝুঁকি সৃষ্টি করে ৩০০-এর বেশি যেকোনো সূচক।
বাংলাদেশে একিউআই সূচক নির্ধারিত হয় পাঁচ ধরনের দূষণের ভিত্তিতে— বস্তুকণা (পিএম১০ ও পিএম২.৫), নাইট্রোজেন ডাই-অক্সাইড (এনও₂), কার্বন মনো-অক্সাইড (সিও), সালফার ডাই-অক্সাইড (এসও) ও ওজোন।
ঢাকা দীর্ঘদিন ধরেই বায়ুদূষণজনিত সমস্যায় ভুগছে। শীতকালে এখানকার বায়ুমান সাধারণত সবচেয়ে খারাপ থাকে, আর বর্ষাকালে তুলনামূলকভাবে উন্নত হয়।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) জানিয়েছে, বায়ুদূষণের কারণে প্রতিবছর বিশ্বে আনুমানিক ৭০ লাখ মানুষের মৃত্যু হয়। এসব মৃত্যুর প্রধান কারণ হলো স্ট্রোক, হৃদরোগ, দীর্ঘস্থায়ী শ্বাসকষ্ট (সিওপিডি), ফুসফুসের ক্যান্সার এবং শ্বাসযন্ত্রের তীব্র সংক্রমণ।